শিশু জন্মের পর অন্তত এক দুই মাস বাবা মায়ের বিক্ষিপ্ত অবস্থায় সময় কাটে। বারবার কাঁথা পাল্টানো, ডায়াপার পাল্টানো, অসুখ লেগে থাকা, রাতের ঘুম বলতে জীবনে কিছু না থাকা- সব মিলিয়ে একেবারে পারফেক্ট হ য ব র ল অবস্থা যাকে বলে! এর মধ্যে বাচ্চার ডেভেলপমেন্টাল টাস্ক বা স্টিমুলেশনের বিষয়গুলো মাথায় রাখা খুবই কঠিন কাজ। তবুও পরে পস্তাতে না চাইলে প্রথম থেকেই সবকিছুর সাথে তাল মিলিয়ে চলাটাই ভালো। শিশুর বিকাশ প্রথম এক মাসে কেমন হয়? এখানে সপ্তাহ অনুযায়ী দেয়া হলো।
একটি শিশুর বেড়ে ওঠার সময়ে তার যে বিকাশ হয় সেটাকে অল্প শব্দে বাঁধাই করা মুশকিল। প্রতিটি দিন তার বয়স এক দিন করে বাড়ে, সেই সাথে তার Motor, Emotional, Social, Cognitive, Moral & Conscience, Self Concept, Language, Speech development সহ নানাবিধ বিকাশ চলতে থাকে। প্রত্যেকটি বিকাশেরই বিভিন্ন স্তর আছে, ডেভেলপমেন্টাল টাস্ক আছে।
এই লেখাতে কোন স্পেসিফিক ডেভেলপমেন্ট নিয়ে আলোচনায় যাবো না, ওভারঅল বিকাশের সাধারণ পথ ধরে শিশু তার প্রথম বছরে, বায়ান্নটি সপ্তাহে কিভাবে বড় হয় তা দেখবো-
সপ্তাহ ০১–
জন্মের এক সপ্তাহেই নবজাতক শিশু তার মায়ের উপর ভরসা করতে শুরু করে। সে মায়ের কন্ঠস্বর চিনতে পারে। এটিই এই অচেনা পৃথিবীতে তার প্রথম অভিযোজন প্রক্রিয়া। তাই যত বেশি পারা যায়, শিশুর সাথে কথা বলুন। সে আপনার কথা বুঝতে পারবে না, কিন্তু ভালোবাসার-স্নেহের উষ্ণতা অনুভব করতে পারবে।
আরো পড়তে পারেন-
সপ্তাহ ০২-
এই সপ্তাহে আপনার শিশু আট থেকে চৌদ্দ ইঞ্চি পর্যন্ত দূরের বস্তু দেখতে পারে। ব্রেস্টফিড করানোর সময় নিজের মাথা এক পাশ থেকে অন্য পাশে নাড়ান। অথবা বাবুর চোখের সামনে আঙ্গুলও নাড়াতে পারেন। খেয়াল করুন সে দেখার চেষ্টা করছে কি না। এটি শিশুর আই মাসল ও ট্র্যাকিং স্কিল বাড়াতে সাহায্য করে।
সপ্তাহ ০৩-
যদিও শিশুর মুভমেন্ট এখনও অনিয়ন্ত্রিত, তবুও খেয়াল করবেন সে এখন আরামদায়কভাবে শুতে চাইছে। সে এখন তার মায়ের ঘ্রাণ বুঝতে পারে, মায়ের কাছে শান্তি ও স্বস্তি অনুভব করে। শিশু ও প্যারেন্টের ‘এ্যাটাচমেন্ট’ এর প্রথম পর্যায় শুরু হয় এই সপ্তাহে।
সপ্তাহ ০৪-
লক্ষ্য করেছেন, কান্না ছাড়াও আপনার শিশু এখন তার ভোকাল কর্ডকে অন্যভাবে ব্যবহার করছে? সে এই সপ্তাহ থেকে বিভিন্ন শব্দ করার চেষ্টা করবে, বিশেষ করে মা কিংবা বাবাকে দেখলে ‘আহ’ বা অন্য কিছু বলার চেষ্টা করবে। শিশু অন্যদের দেখে শিখে, তাই সে এধরণের শব্দ করলে অবশ্যই তাকে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে সে যে শুধু খুশি হবে তা নয়, সে বুঝতে পারবে ভয়েস তার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। কারণ সে ডাকলে আপনি তাতে সাড়া দেন।
ফুটনোট:-*প্রতিটি শিশুই ইউনিক। তাই সবার বিকাশ একই রকমভাবে হবে না। কেয়ারগিভার হিসেবে আপনার যা যা করা উচিত তা করুন। অনেক সময় সঠিক স্টিমুলেশনের অভাবে শিশুর বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয়। শিশুর কোনরকম শারীরিক সমস্যা মনে করলে পেডিয়াট্রিকস বা অকুপেশনাল থেরাপিস্টের সাহায্য নিন।
0 comments: